বিশেষ মতিনিধি | তারিখ: ৩১-০৭-২০১১
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত পার হওয়ার সময় কোন অবস্থাতেই লোকজনের ওপর গুলি না ছুড়তে বিএসএফকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত হলেও বিএসএফের সদস্যরা গুলি ছুড়বে না।
শনিবার ঢাকায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন। সচিবালয়ে দুই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক শেষে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন জানান, সীমান্তে এখন থেকে কাউকে গুলি করে হত্যা করা হবে না।
বৈঠকে বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের নেতৃত্ব দেন সাহারা খাতুন। আর ভারতের ১২ সদস্যের নেতৃত্ব দেন পি চিদাম্বরম। আলোচনার পর বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিজিবি) মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মহাপরিচালক রমন শ্রীবাস্তব যৌথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় সই করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সীমান্ত পার হওয়ার সময় জনপ্রতি পাঁচশত টাকা করে চাঁদা আদায় করে দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে সমানভাগে ভাগ করে দেওয়ার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আদায়কৃত অর্থ ৭৫-২৫ রেটে ভাগ করার প্রস্তাব দেন।
সীমান্তে ফেলানি হত্যা প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হলে চিদাম্বরম বলেন, ফেলানি ও তার বাবা ছিল সন্ত্রাসী। বিএসএফ তাদের গ্রেপ্তার করে মাঝরাতের দিকে অস্ত্র উদ্ধারে বের হলে আগে থেকে ওঁত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা বিএসএফকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে বিএসএফও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। গোলাগুলির এক পর্যায়ে পালাতে গিয়ে ক্রসফায়ারে ফেলানি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ।
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানের কথা স্মরণ রেখে যাবতীয় পুটুমারা সহ্য করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সাম্প্রতিক মন্তব্যের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিদাম্বরমের কাছে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ মানুষকে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করে কি না। উল্লেখ্য, ভারতের পত্রিকার সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় মনমোহন মন্তব্য করেন, বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ লোক জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক। এসব লোক ভারতবিদ্বেষী এবং আইএসআই দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের মন্তব্য তাঁর কার্যালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রকাশের পর দুই দেশে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এর উত্তরে তিনি এককথায় বলেন, “মনমোহন আমনেত্তে বেশি বুজে?”
এদিকে মনমোহনের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আমির খানকির পোলা মকবুল আহমেদ আস্থার সাথে বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দেওয়া সংখ্যাটি সঠিক নয়। ২৫ শতাংশ নয় প্রকৃতপক্ষে দেশের ৭৫ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক ও পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এ কথার সত্যতা পরীক্ষা করতে চাইলে বাংলাদেশের যে কোন একটি স্টেডিয়ামে পাকিস্তান দলের ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করার আহ্বান জানান তিনি।