নিজস্ব মতিবেদক
জাতির জনক বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ড উদযাপন উপলক্ষে কেক কাটা নিয়ে আজ বৃহত্তর জামায়াতে ইসলামীর বিএনপি শাখার নয়া পল্টনস্থ কার্যালয়ে নায়েবে আমীরদের মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে।
কে কার আগে কেক কাটবেন এবং কাটা কেক ভক্ষন করবেন, তা নিয়ে বচসার এক পর্যায়ে নায়েবে আমীরদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
দাংগায় আহত নায়েবে আমীর সাদেক হোসেন খোকা মতিকণ্ঠকে বলেন, ১৯৭৫ সালে এই দিনে জাতির জনককে হত্যা করা হয়েছিল। তাকে হত্যা করা না হলে আজ আমি সাদেক হোসেন খোকা এখনও সিনেমার টিকেট ব্লেক করে দিন গুজরান করতাম। না হইতাম ঢাকার মেয়র, না হইতাম বিএনপি শাখার নায়েবে আমীর। জেনারেল জিয়া, আপনে ইয়ে বহুত ভালা কাম কিয়া।
আবেগঘন কণ্ঠে খোকা বলেন, কিন্তু বিএনপি শাখারই কতিপয় নায়েবে আমীর সিনিয়র জুনিয়র মানে না। তারা খালি পিছন হতে ঠেলাঠেলি ধাক্কাধাক্কি করে। আর বলে, আমারে দেন আমারে দেন। আমি কেক কাটব, আমি আমি। আরে সালা ঘোচুর দল, শৃংখলা বলে ত একটা বেপার আছে নাকি? ফখা ভাই কেক কাটতে বগুড়া গেছে, আমিই সেখানে সর্বাপেক্ষা সিনিয়র। কতিপয় জুনিয়রকে ধমক দিয়া বললাম, লাইনে খাড়াছে। ঠেলছ কিলিগা? তখন তারা আমায় অবিকল ফখা ইবনে চখার ষ্টাইলে পেলব গালে কঠর থাপ্পড় দিয়া বলিল, সালা ঘোচু। তারপর বিষ্টির মত মাইর শুরু হইল। আমি এর বিচার চাই।
কেক দাংগায় আহত উকিলে আমীর বেরিষ্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া মতিকণ্ঠকে বলেন, বিএনপি শাখায় নারী পুরুষের অবাধ মিলামিশা একটা বড় সমস্যা হইয়া গেছে। আমরা পুরুষের দল কেক কাটতেছি, এর মধ্যে কতিপয় ফেন্টাষ্টিক ফাইভ আসিয়া বলে, ঐ বেডার দল ডাইনে হালকায় বামে চাপ। এখন আমরা কেক কাটবাম। আপনারাই বলেন, জাতীয়তাবাদ বা ইসলামী চিন্তাধারায় নারীর কেক কাটার কুন সুযোগ আছে? নারী কাটবে পিয়াজ রসুন আদা আর পান সুপারী সাদা।
আবেগঘন কণ্ঠে বেরিষ্টার রফিকুল বলেন, আজ এই খুশির দিনে বিএনপি শাখার কেকলোলুপ নারীদের হাতেই মাইর খাইলাম। আমার নেকীর খাতায় দুইশ নেকী কাটা গেল।
সালামী দাংগায় গুরুতর আহত নায়েবে আমীর মির্জা আব্বাস ইউনাইটেড হাসপাতাল হতে সকালেই মুক্তি পেয়ে নয়া পল্টন কার্যালয়ে কেক কাটতে এসে কেক দাংগায় পুনরায় গুরুতর আহত হন। তিনি মতিকণ্ঠকে বলেন, এই দাংগায় কমপক্ষে ৬১ জন নিহত হয়েছে। ডাইনে বামে বিষ্টির মত আর্জেস গ্রেনেড পড়তেছিল। কেক কাটার জন্য সকলেই হাতে চাপাতি কুড়াল নিয়া খাড়াইয়া ছিল। আমি সবাইকে বললাম, আপনারা লাইনে আসুন। সবাই কেক পাবেন। জাতির জনক বংগবন্ধু শেখ মুজিব হত্যার ৩৮ বতসর পুর্তি উপলক্ষে ৩৮ কেজি কেক আছে। নিজেরাও খাইবার পাইবেন, বাসায় ভি লইবার পাইবেন। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনল না। শুরু হইল হানাহানি কাটাকাটি জ্বালাও পোড়াও।
আবেগঘন কণ্ঠে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম?